দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছি- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আজকাল ডেস্ক: বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে নিজের জীবনটা উৎসর্গ করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমি আমার জীবনটা উৎসর্গ করেছি এদেশের মানুষের কল্যাণে।
আমার বাবা যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন তা যেনো ব্যাহত না হয়। একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ সেটা পারবো। বাংলার মানুষের জন্য আমরা ত্যাগ স্বীকার করতেও প্রস্তুত, যেভাবে বাংলার মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু জীবন দিয়ে গেছেন।
রোববার (৩০ আগস্ট) ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস’ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সভায় যুক্ত হন।
সভায় প্রধানমন্ত্রী আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আমি আমার মা-বাবা ও সবাইকে হারিয়েছি। দেশে আসতে আমার অনেক বাধা দেওয়া হয়েছিলো, তারপরও আমি দেশে আসতে পেরেছি। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের ক্ষুধা দারিদ্র মুক্তির জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। তার সেই আদর্শ ও লক্ষ্য প্রতিষ্ঠার জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার ভেতরে ছিলো এক দফা। কারণ তিনি জানতেন ছয় দফায় সমাধান হবে না। এই স্বাধীনতার জন্য তাকে জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে নিয়ে রাখা হয়। তাকে যেখানে রাখা হয়েছিল সেখানে গরম ছিলো ১০৮ ডিগ্রি, এছাড়া সেখানে প্রচণ্ড শীতও পড়তো। তাকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়ার সময় মাথার পেছনে বন্দুক দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর একটি বিধ্বস্ত দেশ গঠনে যা যা করার দরকার সবকিছুই বঙ্গবন্ধু করে গেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে দেখি তিনি সবকিছু ভিত্তি কাঠামো তৈরি করে দিয়ে গেছেন মাত্র সাড়ে তিন বছরে মধ্যে। মার্শাল ল অর্ডিন্যান্স জারি করে, সংবিধান স্থগিত করে যারা ক্ষমতা নেয় তারা গণতন্ত্র দেয় কি করে। মার্শাল ল অর্ডিন্যান্স দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসেন তারা গণতন্ত্র দিতে পারেন না। এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবী আছেন তারা বলেন। কারণ গণতন্ত্র থাকলে তো তাদের মূল্য থাকে না তাই তারা অগণতান্ত্রিক উপায়ে যারা আসেন তাদেরকেই চায়। যতই লিখে রাখুক ইউজ টু মি। বঙ্গবন্ধু স্বাধনীতা দিয়েছেন, এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে চেয়েছিলেন এটাই কি তার অপরাধ, তাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। আর তার ঘনিষ্ঠ জিয়াউর রহমানকে সেনাপতি করে শফিউল্লাহকে সরিয়ে। আজ আশুরা, কারবালার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মিল রয়েছে। তবে কারবালা হত্যাকাণ্ডে নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়নি। কিন্তু ১৫ আগস্টে নারী ও শিশু রেহাই পায়নি।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ২০২০ সাল থেকে ২০২১ এই সময়ে মধ্যে গৃহহীন ও কর্মহীন থাকবে না এলক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এরই মধ্যে দেখা দিলো করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। আমরা করোনা মোকাবিলা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি এবং প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
সবশেষে তিনি দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, মিলিটারি ডিকটেটরদের গড়া দল যারা করেছেন, যারা জঙ্গিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দল করেছেন তাদেরকে আওয়ামী লীগে নেওয়া যাবে না। এদের যারা দলে এনেছেন তারাই দলের ক্ষতি করছেন।
Leave a Reply