মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে ব্যাপক জ¦ালাও-পোড়াও করছে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের নথিবিহীন অভিবাসীরা।
আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করেছে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও ন্যাশনাল গার্ড ও ৭শ মেরিন সেনা মোতায়েন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এদিকে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়েছে টেক্সাসেও। খবর বিবিসি, সিএনএন। দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ২০ জানুয়ারি শপথের পরপরই নথিবিহীন অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এর ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিযান শুরু করে পুলিশ। অঙ্গরাজ্যটিতে বহু সংখ্যক নথিবিহীন অভিবাসী অনেক বছর থেকে বসবাস করে আসছে। ৬ জুন লস অ্যাঞ্জেলেসের এলাকা প্যারামাউন্টে নথিবিহীন অভিবাসীদের শনাক্ত ও আটক করতে অভিযানে নামেন পুলিশ ও আইসিই সদস্যরা। অভিযানের শুরুতেই তারা ব্যাপক প্রতিরোধের সম্মুখীন হন। প্যারামাউন্টের বাসিন্দারা তীব্র বিক্ষোভের পাশাপাশি পুলিশ ও আইসিই সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল, বোতল ও মলোটভ ককটেল বা পেট্রোল বোমা ছুড়তে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে পরের দিন পুলিশ ও আইসিই সদস্যদের সহায়তার জন্য মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল গার্ডের ২ হাজার সদস্যকে মোতায়েনের নির্দেশ দেন ট্রাম্প। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটার পরিবর্তে সংঘাত আরও বাড়তে থাকে। এই অবস্থায় গত সোমবার লস অ্যাঞ্জেলেসে আরও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড এবং তাদের সঙ্গে ৭০০ মেরিন সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাম্প।
প্রথম দফায় যখন লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের পাঠিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম। সে সময় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। সোমবার লস অ্যাঞ্জেলেসে আরও ২ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য ও ৭০০ মেরিন সেনা সদস্য নামানোর পর সানফ্রান্সিসকোর ফেডারেল আদালতে মামলা করে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য প্রশাসন।
এদিকে টেক্সাসের অস্টিনে শতাধিক মানুষের একটি বড় দল মিছিল করে জে জে পিকল ফেডারেল ভবনের দিকে যায়। ভবনটি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। টেক্সাসে এ দিন বিক্ষোভকারীদের হাতে ব্যানার ও পতাকা ছিল। পুলিশের মুখোমুখি হলে তারা ‘আইসিই নিপাত যাক’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার বলেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমকে গ্রেপ্তার করা হলে তা ‘দারুণ’ হবে। লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ নিয়ে ট্রাম্প-নিউসম বাগ্্যুদ্ধে জড়িয়েছেন। এর মধ্যেই গ্রেপ্তারের হুমকি দিলেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকরা জানতে চান, নিউসমকে গ্রেপ্তার করা উচিত কি না। ট্রাম্প বলেন, আমার মনে হয় এটি দারুণ হতো। নিউসম প্রচার পছন্দ করেন, কিন্তু আমার মনে হয় এটি একটি দুর্দান্ত জিনিস হবে।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসের সংঘর্ষ রোধে ‘ভয়াবহ কাজ করেছেন’। নিউসমকে ২০২৮ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’ ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি গ্যাভিন নিউসমকে পছন্দ করি। সে একজন ভালো লোক। কিন্তু সে চরমভাবে অযোগ্য, এটা সবাই জানে।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি গৃহযুদ্ধ চাই না,’ কিন্তু ‘আপনি যদি এটি তার মতো লোকদের ওপর ছেড়ে দেন তবে গৃহযুদ্ধ বাধবে।’
Leave a Reply