বরিশালে শীতকে ঘিড়ে, গরম হচ্ছে শীতবস্ত্রের বাজার
মোঃশহিদুল ইসলাম।। ঋতুর পরিক্রমায় বিদায় নিতে যাচ্ছে কার্তিক। আর অগ্রহায়ণ পার হলেই শীতের বার্তা নিয়ে আসবে পৌষ। কিন্তু প্রকৃতি যেন এখনই শীতের পরশ বুলাতে শুরু করেছে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে দুয়ারে কড়া নাড়ছে শীত।পুরোপুরি শীত আসতে দেরি হলেও বাজারে আসতে শুরু করেছে গরম কাপড়। প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ফুটপাত থেকে শুরু করে নগরীর মার্কেট ও বিপণীবিতানগুলো।
বেচাকেনা তেমন একটা জমে ওঠেনি। তবে দোকানীরা আশাবাদী, শীত একটু বাড়লে বাড়বে কেনাবেচাও।অন্যদিকে দেখা যায়,ব্যস্ততা বেড়েছে ফুটপাতের বাজারে। বরিশাল জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শীতের পোশাক কিনতে নগরীতে আসতে শুরু করেছে নারী পুরুষেরা।শীতকে সামনে রেখে এরই মধ্যে নারী পুরুষেরা ভিড় জমাচ্ছেন এসব মার্কেটে। নগরীর ফুটপাতে চলছে শীতবস্ত্রের জমজমাট বেচাকেনা। মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষসহ প্রায় সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ফুটপাত বাজারগুলো থেকে শীতের কাপড় কেনাকাটা করছে।কিনছেন হালকা ও মাঝারি ধরনের শীতের গরম পোশাক। গত শুক্র শনিবার ছুটির দিনে নগরীর জেলা পরিষদের সামনে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়। শুধু তাই নয় হাজী মোহাম্মাদ মহসিন মার্কেট, সিটি মার্কেট, নতুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল, রূপাতলী বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট, সদর রোডসহ বরিশাল নগরীর বিভিন্ন স্থানের ফুটপাত ও মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে শীতবস্ত্র বেচা-কেনার ভিড়। মানুষকে ঈদ বাজারের মতো আগ্রহ নিয়ে শীতের কাপড় কিনতে দেখা গেছে ফুটপাতে। ভিড়ের কারণে দামাদামি ও যাচাই বাছাই করে কেনার সুযোগ অনেকটা কম পাচ্ছে ক্রেতারা। শুধু শীতের কাপড় পছন্দ হলেই একদাম কিনছে। শীতবস্ত্র কিনতে দোকানে ভিড় জমিয়েছেন ক্রেতারা কালেক্টরের সামনে ফুটপাতে বসা ব্যবসায়ী অপু বলেন, আমরা বছরে দুই ঈদ ছাড়া এই শীতে একটু বাড়তি ব্যবসা করার সুযোগ পেয়ে থাকি। তবে সারা বছর আবার এ সুযোগ পাওয়া যায় না বলে তিনি জানান। অপর এক ব্যবসায়ী সামিম বলেন, গত বছরও শীতবস্ত্রের মার্কেট জমজমাট ছিল। তবে এবার শীত আসতেই ক্রেতারা আগে ভাগে শীতের কাপড় কিনে নিচ্ছেন। পলাশপুরের বাসিন্দা ক্রেতা সাহিদা বেগম বলেন, শীতের প্রভাব বেশি পড়ার আগেই এবার শীতের পোশাক কেনার জন্য ফুটপাতের মার্কেটে আসছি। তিনি আরও বলেন, আমরা গরিব তাই আমাদের বেশি দামের পোশাক কেনার সামর্থ্য নেই। তাই ফুটপাতের পোশাকই আমাদের ভরসা। ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতবস্ত্র কিনতে উপচে পড়া ভিড় জমিয়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। সরেজমিন মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, শীত বস্ত্রের মধ্যে বেশি বেচা-কেনা হচ্ছে ছোট বাচ্চা ও বয়স্কদের কাপড়। মাথার টুপি, পায়ের ও হাতের মোজা, মাপলার, সুয়েটার, জাম্পার, ফুলহাতা গেঞ্জির দোকানেই বেশি ভিড় দেখা গেছে।
মহসিন মার্কেট ও সিটি মার্কেটের কম্বল দোকানগুলোতেও তেমন একটা ভিড় লক্ষ করা যায় নেই। মহসীন মার্কেটের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এখন যে সকল ক্রেতারা মার্কেট আসছেন তারা কিনছেন কম দেখছেন বেশি দরদাম দেখে ফিরে যাচ্ছেন। তবে কিছুদিন পর বেচাবিক্রি বাড়বে বলে তারা জানান। বেশি বস্ত্রের দোকানে সুযোগ বুঝে বিক্রেতারাও অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছে ক্রেতারা। বরিশাল সদর উপজেলার সাবেরহাট থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সামনে ফুটপাতে দোকানে শীতবস্ত্র কিনতে আসা নুর-জাহান বেগম বলেন, বাচ্চাদের শীতের কাপড় আগে যেটা ১০০-১২০ টাকায় কেনা যেত এখন সেটা কিনতে হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা দিয়ে। তিনি বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিটি পণ্যের অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। সিটি করপোরেশনের আশপাশের পোশাকের দোকানে অনেকেই কিনছেন শীতের পোশাক। বিক্রেতারা বসেছেন গরম কাপড়ের পসরা সাজিয়ে। নগরীর আনাচে-কানাচে ঘুরে ভ্যান গাড়িতে করে যারা শীতের পোশাক বিক্রি করছেন তাদের ব্যবসাও জমজমাট। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর শীত বেশি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সাধারণ জনগণ।সিটি মার্কেটের গরম পোশাক বিক্রিতা লিটন জানান, ‘শীত তো এখনও আসেনি, তাই ক্রেতাও কম।আরো কিছু দিন পরে কেনা বেচা বাড়বে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply