নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ বরিশাল শের-ই-বাংলা হাসপাতালে (শেবাচিম) ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেয়ায় লোকমান হোসেন নামের একরোগী মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাতে মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত ২৪ জুন তার শরীরে ‘এ’ পজেটিভ রক্তের পরিবর্তে ‘ও’ পজেটিভ রক্ত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন মৃতের মেয়ে রিয়া মনি। পেশায় কৃষক লোকমান হোসেন ঝালকাঠী জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া গ্রামের মুনছুর খা-এর ছেলে।
রিয়া মনি জানান, ২৩ জুন সকালে তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই রাতে শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। প্যাথলজি পরিক্ষা শেষে লোকমান হোসেনের শরীরে রক্তশূন্যতা ধরা পড়ে। তাই তার রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী ‘এ’ পজেটিভ রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র থেকে ‘এ’ পজেটিভ রক্তের পরিবর্তে ‘ও’ পজিটিভ রক্ত সরবরাহ করা হয়। ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ২৪ জুন দুপুর আড়াইটার দিকে তার বাবার শরীরে ‘এ’ পজেটিভ রক্তের পরিবর্তে ‘ও’ পজিটিভ রক্ত দেওয়া হয়।
তিনি আরো জানান, ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়ার পর তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালের ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিউ) প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন না হলেও কয়েকদিন পূর্বে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ড-১ পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে রক্তসহ বমি করেন লোকমান হোসেন। এরপরই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা তাকে উন্নতচিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণের পরামর্শ দেয়। ভুল গ্রুপের রক্ত দেওয়ায় রোগীর লিভার বিকল হয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যান। এরপরই হাসপাতাল থেকে রোগীর সমস্ত কাগজপত্র গায়েব হয়ে যায়। রোগীর ব্যবস্থাপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র রোগীর স্বজনদের না দিয়েই তরিঘড়ি করে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন রিয়া মনি।
শেবাচিম পরিচালক এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, লোকমান হোসেনের শরীরে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়নি। রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র থেকে দেওয়া রক্তের ব্যাগে ‘এ’ পজেটিভ রক্তই ছিলো। কিন্তু রক্তের ব্যাগের ওপরে ভুলে ‘ও’ পজেটিভ লেখা হয়েছিলো। এ ঘটনায় তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লোকমান হোসেন লিভার রোগসহ একাধিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তার মৃত্যু সনদ দেখলে মারা যাওয়ার সঠিক কারন বলা যাবে। কেউ মারা যাওয়ার পর তার স্বজনরা শুধু মৃত্যু সনদ পাবেন। এছাড়ার সরকারি কাগজপত্র হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করবে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply