মায়ের মরদেহ দাফনে বাধা স্কুল শিক্ষকের মায়ের মরদেহ দাফনে বাধা স্কুল শিক্ষকের – ajkalbd24.com
  1. admin@ajkalbd24.com : admin : H.M Aslam
  2. akazadjm@gmail.com : A K Azad : A K Azad
  3. ajkalbd24.com@gmail.com : ajkalbd24 : Niaz Mohammad
  4. hafijakhan804@gmail.com : ajkal1 : ajkal1
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০৩:১১ অপরাহ্ন

মায়ের মরদেহ দাফনে বাধা স্কুল শিক্ষকের

আজকাল ডেস্ক :
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ১৩৮ সময় দর্শন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃঃ ছিল নারী ছেড়া ধন, তিল তিল করে মানুষ করে গড়ে তুলেছেন ছেলেকে। পড়াশুনা করিয়ে বানিয়েছেন শিক্ষকও। সন্তানের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে বাদ দিয়েছিলেন নিজের আরাম আয়েশের কথা। অথচ মায়ের মৃত্যুর পর সে সন্তানই দিয়েছেন মরদেহ দাফনে বাধা। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পূর্ব খন্ড গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খন্ড গ্রামে মৃত মান্নানের স্ত্রী মালেকা বেগম (৬৫) এক সপ্তাহ আগে করোনায় আক্রান্ত হন। উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনি মারা যান।

মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার বড় ছেলে স্থানীয় একটি বেসরকারি ওশিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইকবাল হোসেন শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দাফনে বাধা দেয় পুলিশ। তবে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপ এবং মৃত্যু সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখিয়ে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৪ সালে আব্দুল মান্নান চার ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে মারা যান। পরে জমির বণ্টন নিয়ে তাদের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়। এ সময় ছেলে ইকবাল হোসেন তার মায়ের পাওয়া সম্পত্তির মালিকানা পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। তাকে জমি লিখে না দেওয়ায় তার মায়ের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মা ছোট ছেলের বাসায় ওঠেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ছোট ছেলেই তার দেখভাল করতেন।

ইকবালের ছোট ভাই আমিনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন আমিই মায়ের দেখভাল করে আসছি। মা করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বুধবার রাতে তিনি মারা যান। বাড়িতে মরদেহ নিয়ে আসার পর বড় ভাই পুলিশ নিয়ে এসে দাফনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। যদিও স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে অবশেষে মরদেহ দাফন করা হয়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, যে মা খেয়ে না খেয়ে সন্তানকে মানুষ করলো, সে সন্তান শেষবারের মতো মায়ের মুখও দেখলো না, কবরে একমুঠো মাটিও দিলো না। সবাই যখন দাফন কাফনে ব্যস্ত, তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘরে বসে রইলেন। মা অসুস্থ হয়ে পড়ার পর ভাইকে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও তিনি সারা দেননি।

এ বিষয়ে মৃতের ছেলে অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন বলেন, আমার মায়ের নামে প্রায় দুই বিঘা জমি ও ব্যাংকে ৫০ লাখ টাকা ছিল। এগুলো আত্মসাৎ করতেই মাকে ছোট ভাই মেরে ফেলেছে, এমন ধারনায় আমি থানায় অভিযোগ করেছিলাম। তবে পুলিশ মরদেহের ময়নাতদন্ত না করেই চলে গেছে। আমি এ বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবো।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ বলেন, সম্পদের জন্য এভাবে একটি সন্তান তার মায়ের মরদেহ দাফনে বাধা তৈরি করবে এটা সত্যিই ঘৃণার কাজ। আমরা এলাকাবাসী হিসেবেও এমন কাণ্ডে লজ্জিত। সবচেয়ে বড় কথা সে একজন শিক্ষিত ছেলে, একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এখানে তার শিক্ষাটা অন্তত পরাজিত হয়েছে।

শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে চিকিৎসার কাগজপত্র দেখে স্বাভাবিক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া মৃত নারীর করোনা পজিটিভ ছিল। তবে তিনি যেহেতু ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছেন সেহেতু অভিযোগ থাকলে সেখানে মামলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর