বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ৪নং চাঁদপাশা ইউনিয়নে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের খাঁন সড়ক। প্রতিদিন নানা শ্রেণির পেশার শত শত মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। শুকনো মৌসুমে কোনোভাবে চলাচল করলেও বর্ষা মৌসুমে চলাচল কষ্টে এলাকাবাসীকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। জানা যায়, ১নং ওয়ার্ড আরজিকালিকাপুর এলাকার কাদের খাঁন সড়কটি ইউনিয়নের মধ্যে ব্যস্ততম এই সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে নোমড়হাট হয়ে খাঁনপুরা ও এয়ারপোর্ট, রেন্ডিতলা হয়ে টেপের হাট যাতায়াত করেন ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তা সংস্কার না করায় খানাখন্দে ভরে গেছে। আর গ্রামীণ সড়কের এই বেহাল দশা যেন দেখার কেউ নেই। খালের পাড়ে হওয়ায় ভেঙে গেছে রাস্তা। উঠে গেছে ইটের সলিং। বৃষ্টি হলেই জল জমে পুকুরে পরিণত হয়ে যায়। রাস্তাজুড়ে কাদায় মাখামাখি হয়। এক যুগের বেশি সময় ধরে চরম ভোগান্তিতে আশেরপাশের স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার কমলমতি শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণ। বর্ষা মৌসুমেই এলেই রাস্তায় চলাচলকারী পথচারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত ইট উঠে রাস্তা ভেঙে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। আর এতে ঘটছে দুর্ঘটনা। এই বিষয়ে ভুক্তভোগী আরজিকালিকাপুর মাথ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, রাস্তাটি দিয়ে দৈনিক প্রায় দুই/তিন হাজার মানুষ চলাচল করে। যুগের পর যুগ পেরিয়ে গেলেও বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের খান সংযোগ সড়কটিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ইটের রাস্তা শুধু নামেই কাজে শুধু জনগণের ভোগান্তি। তবে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন অসুস্থ ও প্রসূতি রোগীরা। ওই এলাকার বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ভোট এলেই এই সড়ক সংস্কার করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি দেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে গেলে তাদের আর লুফা দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না। তাদের দাবি, শিগগিরই এসব সড়কের সংস্কার কাজ করে যেন মানুষকে ভোগান্তি থেকে রক্ষা করা হয়। এই বিষয়ে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের খান তিনি ছিলেন বাবুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির মধ্যে অন্যতম সক্রিয় নেতা। অথচ তার নামে নামকরণ হওয়া রাস্তা ইউনিয়নবাসীর চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই রাস্তার কারণে আজও মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের পরিবর্তন হয়নি। এ সময় তিনি আরও বলেন, এই আসনের বর্তমান সাংসদ গোলাম কিবরিয়া টিপু তার কাছেও রাস্তার জন্য কয়েক বার গিয়েছি একটা ডিউ লেটারের জন্য, বিভিন্ন অযুহাত দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে তিনি জানান। ৪নং চাঁদপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান সবুজের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, চাঁদপাশা ইউনিয়নে প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার কাদের খান সড়কসহ আরও বেশ কিছু হেরিন বনের রাস্তা রয়েছে, যা খুবই খারাপ অবস্থা। এ বিষয়ে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু সাংবাদিকে বলেন, ওই ইউনিয়নে কাদের খাঁন সড়কসহ আরও কয়েকটি রাস্তা পিজিপি প্রকল্পে পাশ হয়েছে। অন্য রাস্তাগুলোও টেন্ডার হয়ে আছে। করোনার কারণেও সব কিছু এলোমেলো। ঠিকাদারও কাজ বুঝে নিয়েছেন। এখনও রাস্তার কাজ কেন পিছিয়ে আছে, তা আমি সুনিদিষ্টভাবে বলতে পারবো না । তবে বিষয়টি দেখবে বলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান ।
Leave a Reply