নিজস্ব প্রতিনিধিঃঃ বরিশাল নগরীর সাগরদীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাংগ্রুপ সানি-নোমান বাহিনী। বিগত সময়ের ধারাবাহিকতায় এই গ্রুপটি এবার স্কুলছাত্র ও স্থানীয় এক নির্মাণশ্রমিককে মারধর করে ছিনিয়ে নিয়েছে টাকা। এবং তাদের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নির্মাণশ্রমিক মো. ইউসুফ আলী হাওলাদার এবং স্কুলছাত্র মারুফ ও রাতুল। গত শনিবার দুপুরে স্থানীয় গাবতলা ব্রিজের সামনে সানি-নোমান সঙ্গী সমেতের এই হামলার ঘটনায় কোতয়ালি মডেল থানায় বাহিনীপ্রধান সানি-নোমানসহ ৮জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল রোববার মামলাটি করেন হামলার শিকার নির্মাণশ্রমিক ইউসুফ আলী হাওলাদার।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, স্থানীয় শাজাহান হাওলাদারের ছেলে মো. সানি, জলিল মুন্সির ছেলে জুবায়ের মুন্সি ওরফে নোমান স্থানীয়ভাবে কিশোর গ্যাংগ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করাসহ মাদক বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। গত ৩০ নভেম্বর তারা জনৈক তামিম নামে এক স্কুলছাত্রকে গাবতলা ব্রিজের ওপর বসে মারধর করছিল। এই খবর পেয়ে বন্ধু মারুফ কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ঘটনাস্থলে তাকে উদ্ধারে যায়। এবং কিশোর গ্যাংগ্রুপের হাত থেকে তামিমকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। তখন সানি ও নোমান বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে পরবর্তীতে মারুফকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
বাদীর অভিযোগ, সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৫ ডিসেম্বর দুপুরে মারুফ ও তার চাচাতো ভাই রাতুলকে একই স্থানে পেয়ে সানি, নোমান ও তাদের বাহিনীর সদস্য আব্দুল্লাহ আল আদী সাগর হাওলাদার, রফিক, ইমরান, নুর হোসেনসহ আরও বেশ কয়েকজন মিলে মারধর করে। এসময় ডাৎ-চিৎকারের শব্দ পেয়ে নির্মাণশ্রমিক ইউসুফ আলী ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং কিশোর গ্যাংদের প্রতিরোধে চেষ্টা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা একত্রিত হয়ে ইউসুফ আলীর ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তাকে এলোপাতাড়ি পিটুনি দিয়ে পকেটে থাকা প্রায় ১১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরক্ষণে স্থানীয়রা রাতুল, মারুফ ও ইউসুফ আলীকে উদ্ধার করে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যায়।পরবর্তীতে খবর পেয়ে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এই হামলার ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল হক জানিয়েছেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু এর আগে সকলে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এবং আসামীদেরও গ্রেপ্তার করার তৎপরতা চলছে।
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, সানি-নোমানের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি কিশোর গ্যাংগ্রুপ পরিচালিত হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতায় তাদের উৎপাত কিছুদিন বন্ধ থাকলেও এবার স্কুলছাত্র ও নির্মাণশ্রমিককে মারধরের ঘটনার মধ্য ফের আলোচনায় এসেছে। গ্রুপটি স্থানীয়ভাবে মাদক বাণিজ্যসহ নানামুখী অপরাধের সাথে জড়িত থাকায় এলাকাবাসী সংক্ষুব্ধ হলেও ভয়ে অনেকেই মুখ খুলছে না।কালবিলম্ব না করে স্থানীয় বাসিন্দারা এই গ্যাংগ্রপের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি রেখেছে।’
Leave a Reply