খুন হওয়ার ১৯ মাস পর মাসুম বিল্লাহ পাহলান (২৫) নামে এক যুবককে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। করোনার প্রকোপে ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে তিনি আত্মগোপন করেন বলে জানান মাসুম।
জানা গেছে, আর্থিক দ্বন্দ্বে শ্বশুরের মামলা রয়েছে তার ওপর। এসব ঘটনা কেন্দ্র করে আত্মগোপনে চলে যান মাসুম। ছেলেকে না পেয়ে মাসুমের বৃদ্ধ মা মোসা. কুলসুম বেগম বাদী হয়ে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ছেলেকে খুনের পর গুমের মামলা করেছিলেন। যে মামলায় আসামি করা হয়েছিল মাসুমের শ্বশুর মো. ইউনুচ পাহলান ওরফে বাবুল (৫১), মোসা নুরুন্নাহার বেগম (৪৫) এবং মাসুমের স্ত্রী মোসা. তামান্না বেগমকে।
পরে আদালতের নির্দেশে পটুয়াখালী সিআইডি পুলিশের একটি টিম মাসুমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে। কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের মুসল্লিয়াবাদ গ্রামের মো. মোস্তফা হাওলাদারের ছেলে এই মাসুম। সিআইডি পুলিশের এসপি মো. মাসুম বিল্লাহ এমন তথ্য নিশ্চিৎ করেন।
ঘটনার বরাত দিয়ে সিআইডি পুলিশ বলেন, ২০২১ সালের ১০ জুনে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন মাসুম। সম্ভাব্য এলাকাগুলোতে অনেক খোঁজ করেও পায়নি পরিবার। পরে ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর কলাপাড়া ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে খুন-গুমের মামলা করেন মাসুমের বৃদ্ধ মা মোসা. কুলসুম বেগম। যে মামলায় মাসুমের স্ত্রী তামান্না, শ্বশুর-শাশুড়িকে অভিযুক্ত করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, বিয়ের পর মাসুমের স্ত্রী পিত্রালয়ে বসবাস করতেন। ২০১৮ সালে শ্বশুরের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে মাছের ব্যবসা শুরু করেন মাসুম। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় শ্বশুর পরিবারের সঙ্গে কলহে জড়িয়ে পড়েন মাসুম। জামাতাকে দেওয়া টাকা ফেরত পেতে মাসুমের শ্বশুর মামলা করেছিলেন। যে মামলায় মাসুমের বাবা-মাকে অভিযুক্ত করা হয়। এসব ঘটনায় দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি দেখা দেয়। এতে হতাশ হয়ে পড়েন মাসুম। পরে ২০২১ সালের ১০ জুন রাতের আঁধারে বাড়ি ছাড়েন মাসুম।পরে ১৪ ফেব্রয়ারি রাজধানীর ডেমরা থেকে মাসুমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এসআই নিমাই চন্দ্র মন্ডল বলেন, বাড়ি থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে ছিলেন মাসুম। আত্মগোপনে থাকাবস্থায় শ্রমিকের কাজ করতেন। হঠাৎ মাসুমের তিন মাসের শিশুসন্তান অসুস্থ হয়ে পড়েন। সন্তানের চিকিৎসা করতে বিকাশের মাধ্যমে স্ত্রী তামান্নার কাছে টাকা পাঠায় মাসুম। যার সূত্র ধরে মাসুমকে বের করতে সক্ষম হয় তারা।
Leave a Reply