নিজস্ব প্রতিবেদক:: বরিশাল রুপাতলী মিনি বাস টার্মিনালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এবং সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ অনুসারীদের মধ্যে ফের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা বাস টার্মিনাল এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ তাৎক্ষণিক পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করায় সেখানে বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এর আগে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে অনুরুপ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে দুই নেতার অনুসারীরা। তখনও পুলিশ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
একাধিক সূত্র জানায়, কয়েক বছর ধরে রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিলেন সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের অনুসারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান মাহামুদ। বিগত সময়ে এনিয়ে মেয়র সমর্থিতদের সাথে তার লোকজন সংঘাতেও জড়ায়। চলতি বছরের শুরুর দিতে পূর্বের সেই কমিটি বহাল থাকলেও মেয়র অনেকটা প্রভাব খাটিয়ে তার অনুগত পরিমল চন্দ্র দাস এবং আবু শাহারিয়ার বাবুকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিমন্ত্রী অনুসারী পূর্বের কমিটির সভাপতি সুলতান মাহামুদও টার্মিনালে তার লোকজন নিয়ে পাল্টা অবস্থান নেয়। ফলে সেখানকার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে এবং প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকে। সর্বশেষ দুটি গ্রুপ মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে একদিনে টার্মিনালে অবস্থান নিয়ে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।
বাস টার্মিনালের একটি সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্ব এখন যে পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে তাতে রক্তপাত হওয়ায় সম্ভবনা রয়েছে। পুলিশ প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখলেও সময় বিশেষ শ্রমিকদের সংঘাত রোধ করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো জানায়, শনিবার সিটি মেয়র অনুসারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক আবু শাহারিয়ার বাবুর নেতৃত্বে শ্রমিকদের একটি অংশ টার্মিনালে মহড়া দেওয়া শুরু করলে পাল্টা প্রতিরোধ হিসেবে প্রতিমন্ত্রী অনুসারী সুলতান মাহামুদের লোকজনও মাঠে নামেন। একপর্যায়ে উভয়গ্রুপ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এতে টার্মিনালের অভ্যন্তরে এবং বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে যাত্রী সাধারণ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য সেখানে গিয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় আর সংঘাতে রুপ নেয়নি।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম জানান, রুপাতলীতে শ্রমিকদের দু’গ্রুপে উত্তেজনার খবর পেয়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে বিকেল পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির খবর পাওয়া যায়নি। পরিবেশ আপাতত শান্ত রয়েছে।
তবে সিটি মেয়র অনুসারী শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি পরিমল চন্দ্র দাস অভিযোগ করেছেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে শ্রমিকদের নিয়ে একটি মিছিল করা হলে তাতে কিছু লোক হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় তিনি আইনের আশ্রয় নেবেন।
অবশ্য এই হামলা বা উত্তেজনার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে এ প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করে সুলতান মাহামুদ। তার দাবি, সিটি মেয়রের দেওয়া বিতর্কিত কমিটির লোকজন প্রায়শই টার্মিনালে আসে এবং ঝামেলা করে। এতে শ্রমিকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ওপর চড়াও হওয়ায় কথা শুনেছি।
বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রী এবং মেয়র দুটি প্রুপই টার্মিনালের দুপ্রান্তে অবস্থান নিয়ে আছেন। মাঝখানে পুলিশ মোতায়েন করা রয়েছে।’
Leave a Reply