অনলাইনে দেয়া হতো বিজ্ঞাপন। আকর্ষণীয় বেতন। সেই বিজ্ঞাপন দেখে বেকার যুবকরা আবেদন করতেন। আবেদনের পর সেই চাকরি প্রত্যাশীদের ডাকা হতো। একজন কর্নেল পরিচয় তাদের ভাইবা নিত। এরপর ডাকযোগে নিয়োগপত্র আইডি কার্ড পাঠিয়ে দিত চক্রটি। চাকরিপ্রার্থীদের চাকরির জামানত হিসেবে ৩ লাখ টাকা দিতে হতো। তবে সেই টাকা হাতে নেয়া হতো না। বিকাশের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হতো তাদের কাছে। যোগদানের তারিখে গিয়ে চাকরি প্রার্থীরা সেই ঠিকানা খুঁজে পেতেন না। এভাবে শতাধিক যুবকের সঙ্গে প্রতারণা করেছে একটি চক্র। হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও সম্প্রতি এক কলেজ শিক্ষার্থীর অভিযোগের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রক্ষা হয়নি প্রতারক চক্রের সদস্যদের।
সোমবার রাজধানীর ভাটারা এবং রূপনগর এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের ২ জন সদস্য আটক করেছে র্যাব। তারা হলো- তুফায়েল ইসলাম (৩৪) ও বাচ্চু শিকদার (৩৮)। এসময় তাদের কাছ থেকে ৩ টি মোবাইল ফোন, ভূয়া নিয়োগপত্র ১০ পাতা এবং ২ টি ভুয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৩ এর স্টাফ অফিসার (অপ্স ও ইন্ট শাখা) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস।
তিনি জানান, তারা পেশাদার প্রতারকচক্র। প্রথমে তারা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চাকুরির বিজ্ঞাপন প্রচার করে চাকুরী প্রার্থীদের নিকট থেকে আবেদন আহবান করে। এরপর বাচ্চু শিকদার নিজেকে কর্ণেল জাকারিয়া মাহমুদ পরিচয় দিয়ে মোবাইলে কল করে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিতো। তারপর আসামিরা তাদের ভূয়া কোম্পানীর লোগো সম্বলিত আইডি কার্ডসহ নিয়োগপত্র কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠিয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের নিকট বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতো।
চাকরি প্রার্থীরা তাদের কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, বিটিআরসি অনুমোদিত আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিভিন্ন উপজেলায় সাব-অডিট অফিস সৃজন করে অডিট অফিসার হিসেবে নিয়োগ এবং ডিজিটাল যুগের ইলেকট্রনিক্স জালিয়াতিসহ অডিট অফিসে অডিটরদের দুনীর্তি প্রতিরোধের জন্য নতুন অডিট অফিস তৈরী করা হবে বলে অডিট অফিসার নিয়োগ দিবে।
একপর্যায়ে তারা পরীক্ষার ফি, মোটর সাইকেলের রেজিষ্ট্রেশন ফি, চাকুরির নিরাপত্তা জামানত ইত্যাদি নানা অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি আরো জানান, কলেজ পড়ুয়া এক ছাত্র অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে ই-মেইলে প্রতারকদের কাছে আবেদন করে। প্রতারকদের প্ররোচনায় তাদেরকে তিন লাখের বেশি টাকা পরিশোধের পর প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে র্যাবের নিকট অভিযোগ করে। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই চক্রটিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র্যাব।তাদের বিরুদ্ধে শাহজাহানপুর থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
Leave a Reply