বরিশাল নগরীর হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুকুরের একাংশ মাটি ফেলে ভরাট করে বিদায়ী সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর প্রয়াত মায়ের নামে উদ্যান হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহান আরা বেগম উদ্যান ও অভিভাবক ছাউনি।
স্থাপন করা হয়েছে সাহান আরা বেগমের ম্যুরাল। গতকাল বুধবার এ উদ্যানের উদ্বোধন করেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্বাস উদ্দিন খান ও মেয়রপত্নী লিপি আবদুল্লাহ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রীতিভোজে অংশ নেন অতিথিরা।
গতকাল ৯৫ বছরের পুরোনো এ বালিকা বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান গেট দিয়ে প্রবেশের সময় পশ্চিম পাশে বড় আয়তনের পুকুরটির চারপাশ ভরাট করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। চারপাশে স্থাপন করা হয়েছে উন্নতমানের বাল্ব। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক এম এম আমজাদ হোসাইন বলেন, বড় আয়তনের পুকুরটিতে আগে মাছ চাষ হতো। স্কুল কমিটির লোকজন বড়শি দিয়ে মাছ ধরতেন। কয়েক বছর আগে নির্মিত লাইব্রেরি ভবনের কিছু অংশ পুকুরের মধ্যে পড়েছে। এখন উদ্যান করায় পুকুরটির অর্ধেকের বেশি ভরাট হয়ে গেল। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফখরুজ্জামানের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। সহকারী প্রধান শিক্ষক নাজমা বেগমও এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল বলেন, বিদ্যালয়ের অর্থায়নে পুকুর সংস্কার এবং উদ্যান করা হয়েছে। এর কাজ এখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি। তাই ব্যয়ের বিষয়টি এখনই বলা যাবে না। পুকুরটি ভরাটের চেষ্টা হয়েছিল। পাশের ভবন থেকে বালু ফেলায় পুকুরের পশ্চিম পাশ প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। তাছাড়া নির্মিত উদ্যানের পাইলিং করতে গিয়ে পুকুরের আকৃতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের বরিশাল জেলা সমন্বয়কারী রফিকুল আলম বলেন, পরিবেশ আইন অনুযায়ী কোনো পুকুর কিংবা জলাশয় ভরাট করা যাবে না। হালিমা খাতুন বিদ্যালয়ে সৌন্দর্য বর্ধনের নামে উদ্যান করে পুকুরটি সংকুচিত করা হয়েছে। এটি পরিবেশ আইন ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার লঙ্ঘন।
বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক বলেন, পরিবেশ আইন অনুযায়ী পুকুর বা প্রাকৃতিক জলাশয়ের শ্রেণি পরিবর্তন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এমনটা করলে এবং লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply