ওএসডি পরে আমতলীর ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের ওএসডি পরে আমতলীর ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের – ajkalbd24.com
  1. admin@ajkalbd24.com : admin : H.M Aslam
  2. akazadjm@gmail.com : A K Azad : A K Azad
  3. ajkalbd24.com@gmail.com : ajkalbd24 : Niaz Mohammad
  4. hafijakhan804@gmail.com : ajkal1 : ajkal1
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০২:০২ অপরাহ্ন

ওএসডি পরে আমতলীর ইউএনওর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের

আজকাল ডেস্ক :
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১
  • ৯৩ সময় দর্শন

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ প্রকল্প-১ এর অধীনে প্রথম ধাপে ১শ’ এবং ২ ধাপের অধীনের আমতলী উপজেলায় হতদরিদ্রদের জন্য ৩’শ ৫০ টিসহ মোট ৪শ ৫০টি ঘর বরাদ্দ দেয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।ইউনিয়ন অনুযায়ী বরাদ্দ থেকে শুরু করে সকল কাজেই লুকোচরি এবং ঘড় নির্মানে ব্যাপক দুর্নীতি এবং অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান।

আমতলীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেওয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের হতদরিদ্রদের স্বপ্নের ঘর নির্মানে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অত্মসাৎ এবং স্বজন প্রীতি এবং টাকার বিনিময়ে ঘড় দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের পর তদন্তে তা প্রমানিত হওয়ায় আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামানকে ওএসডি করে সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে উপসচিব আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বদলীর অদেশে জারি করেন।

এ আদেশের পর ওইদিনই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমতলীর ইউএনওকে বদলী এবং ওএসডির খবর ছড়িয়ে পড়লে আমতলীতে আনন্দের বন্যা বইছে।এর আগে তার অফিসের কর্মচারী এনামুল হক বাদশাকে অন্যত্র বলীর পর সাময়িক বরাখাস্ত করেন বরগুনার জেলা প্রশাসক।

 

নীতিমালা অনুযায়ী ঘড় বরাদ্দ থেকে শুরু করে নির্মান পর্যন্ত ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের কথা।ইউএনও কোন সভা না করে কাগজে কলমে একটি কমিটি গঠন দেখিয়ে গোপনে সব কাজ করতেন একা।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান বলেন, কোন কমিটি হয়নি।

ইউএনও পকেট কমিটি করে স্বাক্ষর নিয়ে সব কাজ একই করেছে। আমিসহ কমিটির কোন সদস্য ঘড় নির্মান সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুই জানি না।ঘড় বরাদ্দ, মালামাল ক্রয় করাসহ সব কাজ ইউএনও কার্যলয়ের কর্মচারী এনামুল হক বাদশার মাধ্যমে করতেন।দপ্তরে দপ্তরে গিয়ে সাদা খাতায় বাদশা সভার রেজুলেশনের জন্য স্বাক্ষর নিতেন। স্বাক্ষর নেওয়ার পর ইউএনও তা সংরক্ষণ করতেন।আমি রেজুলেশনে স্বাক্ষর দিতে না চাইলে ইউএনও আমাকে মারতে উদ্যত হন।

কমিটির আরেক সদস্য আমতলী উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘড় নির্মান সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।ইউএনও গোপনে সব কাজ একাই করেছেন। তিনি আরো বলেন, আমি এই কমিটির সদস্য কিনা তাও জানায়নি ইউএনও। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন সভা আছে বলে ইউএনও লোক পাঠিয়ে সাদা খাতায় স্বাক্ষর নিতেন।আমতলীর ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর আমতলীতে ইউএনও হিসেবে যোগদানকরেন।

যোগদানের পরেই টাকা কামানোর জন্য ইউএনও অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিনত করেন।আর এই কাজের ইউএনওর ডান হস্ত হিসেবে আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন ওই কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনামুল হক বাদশা।

তার মাধ্যমে ত্রাণের ঘরসহ বিভিন্ন প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেন লক্ষ লক্ষ টাকা। তার দুর্নীতি থেকে রেহাই পায়নি মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেওয়া আশ্রায়ণ প্রকল্পের-১ ও ২ ধাপ এর অধীনে আমতলীর হতদরিদ্রদেরধাপ-১ ১শ এবং ধাপ-২ এ ৩’শ ৫০ টি ঘরসহ মোট ৪শ’৫০টি ঘড়। ওই প্রকল্পের ঘর প্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

ঘর প্রতি বরাদ্দের এক লক্ষ ৯০ হাজার টাকা থাকলেও তিনি তার প্রতিনিধির মাধ্যমে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করেন।ঘড় নির্মানের সময় মালামাল পরিহনের টাকা ঘড় মালিকের নিকট থেকে আদায় করতেন। এ টাকা কেউ দিতে না চাইলে তাকে ঘড় বাতিলের হুমকি দিতেন।তাছাড়া ঘড় মালিকের মাধ্যমে ইট এবং সিমেন্ট আনিয়ে তা দিয়ে কাজ করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া তার কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনামুল হক বাদশার নিজ গ্রাম দ্রবাড়িয়ায়ার টাকার বিনিময়ে বাদশার ধনাট্য স্বজনদের ৩০টি ঘর বরাদ্দ দেন ইউএনও।ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান ঘর নির্মাণে সুজন মুসুল্লী ও হাবিব গাজী নামের দুইজনকে প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেন।

তারা ঘর প্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা আদায় করে এনামুলের মাধ্যমে ইউএনও হাতে পৌছে দিতেন। যারা টাকা দিতেন তাদের বাড়ীতেই পৌছে যেত ঘর নির্মাণের নিম্নমানের সামগ্রী।ইউএনও ঘর বরাদ্দের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে গত ২৫ এপ্রিল থেকে সমকালসহ বিভিন্ন জাতয়ি দৈনিক ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।ওই প্রতিবেদন নজরে আসে বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের। তাৎক্ষনিক তিনি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।ওই তদন্ত কমিটির ঘরের তালিকা তৈরিতে অনিয়ম,দুর্নীতি ও টাকার বিনিময়ে ধনাঢ্য ব্যাক্তিদের ঘর দেয়ার সত্যতা পায়।বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান ওই প্রতিবেদন জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়ে দেয়।

ওই প্রতিবেদনের আলোকে রাষ্টপতির আদেশক্রমে সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উপসচিব আবুল ফাতেহ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে আমতলীর ইউ্ওনও মো. আসাদুজ্জামানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-ওএসডি করা হয়।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে। একই অভিযোগে গত ৫ মে তার কার্যালয়ের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. এনামুল হক বাদশাকে বরগুনার বেতগী উপজেলায় বদলীর পর সাময়ীক বরখাস্ত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।

সোমবার রাতে ইউএনও আসাদুজ্জামানকে ওএসডির খবর আমতলীতে ছড়িয়ে পরলে তা ভাইরাল হয়।

ঘড় নিয়ে দুনীতির এহোতা আমতলীর ইউএনও মো. আসাদুজ্জামানের ওএসডির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২০ জুন সারাদেশে হতদরিদ্রদের দেয়া ঘরের উদ্বোধন করেছেন।একযোগে সারা দেশে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রচারের আয়োজন থাকলেও আমতলীতে এধরনের কোন আয়োজন ছিল না।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ঘর উদ্বোধন করলেও আমতলীর ঘরের নির্মাণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজ করায় বেশ কয়েকটি ঘরের দেয়াল ধসে পরেছে।

খোজ নিয়ে জানাগেছে, কাউনিয়া গ্রামের জাহাঙ্গির বেপারী ঘড়ের ভিতরের দেওয়াল এবং ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের হরিদ্রাবাড়িয়া গ্রামের হামিদা বেগমের ঘরের সামনের পিলার ধসে যায়।

মো. আসাদুজ্জামান তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার থাকাকালিন ত্রাণের ঘর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়নের অভিযোগ রয়েছে। ঘর হস্তান্তরের আগেই বেহালা গ্রামের বিধবা উর্মিলা রানীর ঘর ভেঙ্গে পড়ে। এনিয়ে সারা দেশ ব্যাপী শোরগোল পড়ে যায়।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমতলীর ইউএনও মো. আসাদুজ্জামানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা-ওএসডি করার আদেশের কপি পেয়েছি। আদেশ মোতাবেক তাকে ইতিমধ্যে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর