টাকা খরচই বড় চ্যালেঞ্জ টাকা খরচই বড় চ্যালেঞ্জ – ajkalbd24.com
  1. admin@ajkalbd24.com : admin : H.M Aslam
  2. akazadjm@gmail.com : A K Azad : A K Azad
  3. ajkalbd24.com@gmail.com : ajkalbd24 : Niaz Mohammad
  4. hafijakhan804@gmail.com : ajkal1 : ajkal1
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন

টাকা খরচই বড় চ্যালেঞ্জ

আজকাল ডেস্ক :
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২২
  • ৫৩৯ সময় দর্শন

অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি ফেরাতে বেশি করে টাকা ব্যয়ের ওপর জোর দিয়ে আসছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, বেশি টাকা ব্যয় হলে এর প্রভাব পড়বে সব শ্রেণির মানুষের ওপর। এতে চাঙা হবে দেশের অর্থনীতি। কিন্তু সেভাবে অর্থব্যয় করতে পারছে না মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলো। অর্থ বিভাগের সর্বশেষ হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাজেটের অর্থব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। ফলে চলতি জানুয়ারি থেকে আগামী জুন পর্যন্ত ব্যয় করতে হবে সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা। ওই হিসাবে প্রতিমাসে পৌনে এক লাখ কোটি টাকা খরচ হবে। আগামী দিনগুলোয় এ পরিমাণ টাকা ব্যয় করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।

সূত্রমতে, মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেওয়া হলেও সক্ষমতার অভাবে অধিকাংশই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম খরচ করেছে। সব মিলে বিগত ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) অর্থ ব্যয় করা হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। স্বল্পমাত্রায় অর্থব্যয়ের কারণে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও গতি পাচ্ছে না। এর মধ্যে শুরু হয়েছে ওমিক্রনের চোখ রাঙানি।

যদিও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ওমিক্রন নিয়ে যতটা ভয় পাচ্ছি, ততটা ভয়ের কিছু নেই। সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। বিধিনিষেধের মধ্যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত আছি। পরিস্থিতি আগের মতোই মোকাবিলা করা হবে। জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, চলতি বাজেটে টাকা খরচ কম হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অর্থব্যয়ের লক্ষ্য ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যয় হয়নি। তবে এই সময় পরিস্থিতি বিবেচনায় টাকা ব্যয় বেশি হওয়া দরকার। আর টাকা বেশি ব্যয় হলেই ঘাটতি সৃষ্টি হবে। বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। নিট উৎস থেকে বেশি মাত্রায় আদায় হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, টাকা খরচ না হওয়ায় ঘাটতি নেই বাজেটে।

মন্ত্রণালয়গুলোর গত ৬ মাসের অর্থব্যয় নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে অর্থ বিভাগ। সেখানে দেখা যায়, নির্বাচন কমিশনকে চলতি বাজেটে ১৭২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিপরীতে ব্যয় করেছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। তবে সম্প্রতি সারা দেশে নির্বাচন পরিচালনার কারণে সংস্থাটি নির্ধারিত সময়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগের যেভাবে অর্থ ব্যয় করার কথা, সেভাবে হয়নি। এ বিভাগে বরাদ্দ আছে ২৫ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা। সেখানে ব্যয় করেছে মাত্র ৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা।

করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অর্থবছরের শুরুতে চালু করা সম্ভব হয়নি। বছরের শেষদিকে খুলে দিলেও আবার নতুন করে ওমিক্রনের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এরপর প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে দেখা যায়, ২৬ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ব্যয় করছে ৯ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিভাগ বরাদ্দের ৩৬ হাজার ৪১৫ কোটি টাকার বিপরীতে ব্যয় ১১ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এ সময় অর্থব্যয় করেছে ১ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দ আছে ৯ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। একইভাবে কৃষি মন্ত্রণালয় ১৬ হাজার ১০১ কোটি টাকার বিপরীতে ব্যয় করেছে ৪ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। খাদ্য মন্ত্রণালয় ৫ হাজার ৩০৯ কোটি টাকার বিপরীতে ব্যয় করেছে ৩ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় ব্যয় করেছে ২ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা। বরাদ্দ আছে ২৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা। এছাড়া আরও অনেক মন্ত্রণালয় বিগত ছয় মাসে পরিচালনা ও উন্নয়ন ব্যয় কম করেছে।

কোভিড-১৯ প্রতিঘাতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা খরচের উদ্দেশ্যে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন। বছরের মাঝামাঝি দেখা যায়, প্রথম ছয় মাসে ব্যয় হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। ফলে আগামী ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন) বাজেট বাস্তবায়ন করতে হলে বাকি ৭৫ শতাংশ ব্যয় করতে হবে, যা টাকার অঙ্কে ৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৫১ কোটি। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় করতে হবে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। একই সময়ে রাজস্ব আহরণ করতে হবে ২ লাখ ৩ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা।

এ প্রসঙ্গে বিআইডিএস-এর সাবেক ডিজি এমকে মুজেরি যুগান্তরকে বলেন, অন্যান্য বছরও বাজেট বাস্তবায়ন এ সময় কম হয়। তবে তুলনামূলক এ বছর বাস্তবায়ন হার আরও কমেছে। কারণ, অর্থনীতিতে ধাক্কা দিয়েছে কোভিড-১৯। এ সময় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। তবে এডিপি বাস্তবায়ন কম হওয়ার কারণে রাজস্ব আহরণ কমছে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকি আছে।

সূত্রমতে, রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ পর্যালোচনা করেছে। সেখানে এনবিআর-এর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমসহ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আদায় হয় ১ লাখ ২৬ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। এটি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ হাজার ৮২ কোটি টাকা বা ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ কম। এ সময় আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে কাস্টমস থেকে আদায় কম হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ১৫ শতাংশ, মূসক থেকে ১১ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং আয়কর থেকে ৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। পর্যালোচনা শেষে শতভাগ রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের আরও সচেষ্ট এবং এনবিআর সংক্রান্ত দপ্তর প্রধানদের মনিটরিং বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও শিল্পের উৎপাদন এখনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। এসব কারণে রাজস্ব আহরণ কমছে। তবে নতুন শঙ্কা ওমিক্রন নিয়ে। এটি নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে গেলে বিরূপ প্রভাব পড়বে ৬ মাসের রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর