নিজস্ব প্রতিনিধিঃঃ পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসছে একের পর এক মৃত ডলফিন। এসব সামুদ্রিক প্রাণী কী কারণে মারা যাচ্ছে তার কারণ অনুসন্ধান না করেই মাটি চাপা দেয়া হয়। তবে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িতদের দাবি, ডলফিন সংরক্ষণে মৃত ডলফিনের ময়নাতদন্ত করা প্রয়োজন। কেননা ডলফিনের মৃত্যুর কারণ জানা গেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে চলতি বছরের ৭ আগস্ট একটি এবং ৯ আগস্ট দুটি মৃত ডলফিন ভেসে আসে। এর আগে গত ৯ মে একটি এবং ১০ মে দুটি ডলফিন সৈকত এলাকায় ভেসে আসে। এ নিয়ে ২০২১ সালে মোট ছয়টি ডলফিন ভেসে এলো।
গতবছর সমুদ্র সৈকতে বিভিন্ন সময় সাতটি ডলফিন এবং একটি তিমি ভেসে এসেছিল। তবে সবগুলো জলজ প্রাণীই ময়নাতদন্ত ছাড়া মাটি চাপা দেয়া হয়। ফলে কী কারণে সামুদ্রিক প্রাণীগুলো মারা যাচ্ছে তা অজানাই থেকে যাচ্ছে। এ কারণে ডলফিন সংরক্ষণে দাবি তুলেছেন উপকূলের পরিবেশ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি ও সংগঠনগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডলফিনের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান এবং করণীয় নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি ডলফিনের মৃত্যুর জন্য পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করে এবং জলজসম্পদ সংরক্ষণে কুইক রেসপন্স টিম গঠনসহ বেশ কিছু সুপারিশ করে। ওই বছরের ৩১ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করেন তারা।
ওই তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, পাঁচটি কারণে ডলফিনের মৃত্যু হতে পারে। সেগুলো হচ্ছে মেকানাইজড ভ্যাসেলের বেহুন্দি জালে আটকা পড়া, মেকানাইজড জাহাজের ফ্যানে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া, অনান্য রাক্ষুসে সামুদ্রিক প্রাণীর আক্রমণ, সামুদ্রিক দুষণ এবং প্রাকৃতিক কারণ।
পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ধারণা করা হচ্ছে, জেলেদের জালে আটকা পড়ে এসব ডলফিন মারা যেতে পারে। ডলফিন কিংবা সামুদ্রিক প্রাণীর মৃত্যুর কারণ নির্ধারণে কুয়াকাটায় একটি গবেষণা কেন্দ্র এবং জাদুঘর স্থাপনের বিষয়ে একটি প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে।
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বিভিন্ন সময় ভেসে আসা মৃত মাছসহ জলজ প্রাণীগুলো একটি অ্যাকুরিয়াম কিংবা জাদুঘরে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিলে তা দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে গবেষণার পাশাপাশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতেও ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা
Leave a Reply